before

Mishkat Abir

  • Mentor's name : Sajedur rahman
  • Previous Weight : 78.8 KG
    Diet : Customized Plan
    Weight Losed : 9.899999999999991 KG
    Time : 12 Weeks

১২ সপ্তাহের মেন্টরশিপ রিভিউ

মেন্টর : Sajedur Rahman

পূর্বের ওজন : ৭৮.৮ কেজি

১২ সপ্তাহের পর ওজন : ৬৮.৯ কেজি

উচ্চতা : ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি

মেজারমেন্ট কমেছে :

হিপ : ৪.৭ ইঞ্চি

ওয়েস্ট : ৫.৮ ইঞ্চি

চেস্ট : ২.৮ ইঞ্চি

প্রায় ৭ বছর আগে আমার ওজন কমানোর চেষ্টা শুরু হলেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছানো আমার জন্য ডুমুরের ফুল বৈকি কিছুই ছিলো না। নিজের মন গড়া ডায়েট আর অনিয়মিত এক্সারসাইজ নিয়ে মাঠে নামার কারণে কিছু দিন পর আর চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না।

ডেসপারেটলি সিকিং ঢাকা গ্রুপের এক ভাইয়ের ডায়েটিশিয়ান চাওয়ার পোস্টের কমেন্ট সেকশন থেকে এই গ্রুপের সাথে পরিচয়। গ্রুপের সদস্য হয়ে রিভিউ দেখতে দেখতে নিজের মাঝেও ফিট হওয়ার ইচ্ছা জেগে উঠলো। আমি ওজন বি এম আই অনুযায়ী কয়েক কেজিই বেশি ছিলো সবসময়। কিন্তু ফিটনেস আমার মধ্যে একবারেই ছিলো না। সব অজুহাত কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আমি শেষমেশ ফেব্রুয়ারিতে মেন্টরশিপ নিয়েই বসি। এখানে বলে রাখি,সাজেদ ভাইয়ের সাথে আমার মেইলে যোগাযোগ হয়েছিলো। ওনার মেইলের রিপ্লাইয়ে আন্তরিক ব্যাবহার আমাকে মুগ্ধ করেছিলো। তাই ইচ্ছা ছিলো ওনার মেন্টরশিপ নেয়ার। পরবর্তীতে ওনাদের পেজ থেকে ওনার ফোন নাম্বার নিয়ে এক শুক্রবারে ওনাকে কল দেই। প্রায় ৩০ মিনিট কথা হয়েছিলো। ওনার গাইডলাইন গুলো শুনে অনেক ভালো লেগেছিলো কারণ ওনার প্রতিটা কথা ছিলো বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট। এভাবে আমাকে কখনো কেউ বুঝায়নি। তাই দেরি না করে নিয়েই ফেলি মেন্টরশিপ। হ্যা, গ্রুপে জয়েনের পর পড়েছিলাম ফিটগাইড। এত সুন্দর ভাবে সাজিয়ে একটি বই লিখে আমাদের কে বিনামূল্যে দেয়ার জন্যও সাজেদ ভাইকে ধন্যবাদ। আমিও আরো কয়েকবার ফিটগাইড পড়লে নিজেই একটি ডায়েট চার্ট তৈরি করে ফেলতে পারতাম। পাশাপাশি সাজেদ ভাইয়ের ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও, ওয়েব সাইটে এবং ফেসবুকে মেন্টরদের লিখা বিভিন্ন ফিটনেস পোস্ট তো ছিলোই বোনাস হিসেবে। কিন্তু একটা বুস্টের প্রচুর প্রয়োজন ছিলো আমার। কারণ আমার এক্সারসাইজ আর ডায়েট বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বন্ধ করে দেয়ার হদিস আছে। তাই মূলত পেইড মেন্টরশিপ নেয়া।

মেন্টরশিপের শুরু থেকেই উনি আমার অনেক অবৈজ্ঞানিক প্রশ্নের উত্তর অনেক ধৈর্যের সাথে দিয়ে এসেছেন। অনেক ভুল ধারণা পরিষ্কার হয়েছে এজন্য। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিলো, কিন্তু মাঝে দিয়ে আমার খালু মারা যাওয়া,আমার পরিক্ষা, বাসায় লোকজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে আমার এই যাত্রায় কিছুটা ভাটা পড়ে, কিন্তু সাজেদ ভাই সব সময় অনুপ্রেরণা দিয়েই গিয়েছেন। প্রতি সপ্তাহে যখন আপডেট দেওয়ার সময় হতো, তখন মনে হতো বোর্ড পরিক্ষার রেজাল্ট দিবে। এক অন্যরকম অনূভুতি কাজ করতো। হ্যা, সব সময় যে ওজন শুধুমাত্র কমেছেই,তা নয়। এক সপ্তাহে ওজন ২০০ গ্রাম বেড়েও গিয়েছিলো। তখন অনেক মন খারাপ হয়েছিলো। সাজেদ ভাই তখন অনেক মোটিভেট করেছেন। যার ফলে পরের সপ্তাহেই প্রায় ৯০০ গ্রাম কমিয়ে ফেলি। নবম সপ্তাহে আমি আমার তখনকার সময় ফিট হওয়া একটা প্যান্ট পড়তে গিয়ে দেখি বার বার ঢিলে হয়ে পড়ে যাচ্ছে।ব্যাল্ট দিয়ে পড়লেও বাজে লাগছে। তখনই আলমারি থেকে একটা পুরনো প্যান্ট নামালাম। এই প্যান্ট টা যখন গিফট পেয়েছিলাম, তখন এটায় কোমর আসতো না। তাও রেখে দিয়েছিলাম,পছন্দ হয়েছিল বলে। কিন্তু এবার হিতে বিপরীত, এক বারেই পড়ে ফেললাম। আমার প্যান্টের সাইজও কমেছে। এই জিনিসটা আমাকে প্রচুর মোটিভেট করলো, তাই পরবর্তী দিন গুলোয় এক্সারসাইজ আরও বাড়িয়ে দিলাম। দিন শেষে অন্যান্য সপ্তাহের চেয়ে আরও ভালো ফলাফল আসলো।

ডায়েট মানে পরিমিত পরিমাণে সব কিছু খাওয়া।আমি অন্য সময়ে যে পরিমাণ ভাত খাই, তা খেয়েই আমি আজকে এই অবস্থানে এসেছি। আমার শুধুমাত্র সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠার পর পেট খালি থাকতো। বাকি সারাদিন ডায়েটের খাবার খেয়েই ভরপেট থাকতাম। তারপরও আমাকে অনেকেই বলতো, আমি রোবট,তাই মেপে মেপে খাই, না খেয়ে থাকি,তাই শরীরের ক্ষতি হবে। কি একটা অবস্থা! ফিটনেসের পথে হাটছি আর শরীর নাকি খারাপ করবে! আমি পূর্বে যে মনগড়া ডায়েট তৈরি করতাম, সেটা আমার শরীরের উপর নেগেটিভ প্রভাব ফেলতো। যেমন আমার নিজের লাস্ট টাইম ডায়েটে ভিটামিন এর অভাবে শরীর মাঝে মাঝে চুলকাতো, ত্বক রুক্ষ থাকতো, মেজাজ প্রায়ই খিটখিটে থাকতো, প্রচুর ক্লান্তি লাগতো, কাজে মনযোগ থাকতো না। পাশাপাশি এসব ডায়েটে আমার হয় প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ক্যালরি নেওয়া হতো অথবা কম। যার কারণে ভালো ফল ও আসতো না আর ডায়েট ও করা হয়ে উঠতো না। আসলে নিয়মের মধ্যে সব নিয়মিত করলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছানো যায়। যা এই গ্রুপ থেকে শিখা হয়েছে আমার।

আজকে এই অবস্থানে আসা মোটেও সহজ ছিলো না। এখন থেকে মেইনটেইন করবো। একটা ব্রেক দিয়ে ইনশাআল্লাহ আবার শুরু করার ইচ্ছা আছে। বিশেষ করে, রমজান মাসে ইফতারের পর আর সেহরির আগে এক্সারসাইজ করেছি। জান বেরিয়ে গেছে। তাই, এখন থেকে সব বুঝে শুনে খাবো আর এই ফিটনেস ধরে রাখবো ঠিক করেছি।

পরিশেষে, ধন্যবাদ দিতে চাই সাজেদ ভাইকে যিনি আমাকে আজকে এই অবস্থানে আসতে সহযোগিতা করেছেন। শুক্র ও শনিবারে ভাইয়ের অফডে থাকার পরেও আমার মেসেজের রিপ্লাই দিয়েছেন। আমার পরিবারের কথা না বললেই নয়। বিশেষ করে আমার মায়ের কথা, আমি রান্না অতোটা পারিনা। মা আমার খাবার সময় মতো তৈরি করে দিয়েছেন। অনেক সমস্যা থাকার পরও ডায়েট পালনে সমস্যা হয়নি আমার কোনপ্রকারের এজন্য। একই সাথে ধন্যবাদ দিতে চাই জিয়ন ভাই,সামিরা আপু, রোজি আপু, মালুয়া আপুকে,যারা নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে পোস্টের মাধ্যমে আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা পরিষ্কার করে দিচ্ছেন এবং আমাদেরকে প্রয়োজনীয় গাইডলাইন দিয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের সকল মেন্টরদের এত ধৈর্যের জন্য ধন্যবাদ কমই হয়ে যায় যদিও। পাশাপাশি ধন্যবাদ দিতে চাই সেই সদস্যদের যারা নিজেদের ওয়ার্কআউট আপডেট এই গ্রুপে শেয়ার করে মোটিভেট করেছেন আরো বেশি ওয়ার্কআউট করার। ধন্যবাদ দিতে চাই সেই সকল মেম্বারদের যারা নিজেদের জার্নি রিভিউ পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করে অনুপ্রাণিত করে গিয়েছেন প্রতিনিয়ত।যখনই মনে হতো আর পারছি না, আমার পক্ষে আর সামনে যাওয়া সম্ভব না,তখনই আপনাদের লেখা গুলো পড়তাম,আপনারা কতটা সমস্যার মাঝে থেকেও কত সফল হয়েছেন। জিনিসটা প্রচুর মোটিভেট করতো। ক্যালরিস গ্রুপের সকল একটিভ মেম্বারদের কেও ধন্যবাদ এত মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য। পাঠক, সময় নষ্ট করে আমার এত বড় লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ। এটা আমার প্রথম লেখা এই গ্রুপে,অনেক জায়গায় সঠিক অর্থ বুঝানোর জন্য বাংলা আর ইংরেজি মিশিয়ে ফেলেছি। পাশাপাশি কোনো ভুল থেকে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন